Skip to main content

বই রিভিউ #১২: মাদারিজুস সালিকীন

 


বই রিভিউ #১২

বই: মাদারিজুস সালিকীন

লেখক: মূল: ইমাম ইবনুল কায়্যিম রাহিমাহুল্লাহ


বইঃ মাদারিজুস সালিকীন
লেখকঃ মূলঃ ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ
পরিমার্জনঃ শাইখ সালিহ আহমাদ শামি
অনুবাদঃ মাওলানা আসাদ আফরোজ
প্রকাশকঃ মাকবাতুল বায়ান
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৬৪০

"মাদারিজুস সালিকীনঃ আল্লাহওয়ালা হওয়ার সার্বিক দিকনির্দেশনা" বিখ্যাত ইমাম ইবনুল কায়্যিম রাহিমাহুল্লাহর লেখা কালজয়ী বই। "সালিক" অর্থ হলো আল্লাহর পথের যাত্রী। এমন যাত্রীর যাত্রার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যে ধাপগুলো আসে, সেগুলোর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা এসেছে বক্ষ্যমান বইয়ে।

সুরা ফাতিহার আয়াতের বিশ্লেষণ দিয়ে সূচিত হয়ে "ইয়্যাকা না'বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতায়ি'ন" আয়াতের গভীরে ডুব দেওয়া হয়েছে। "আমরা কেবল আপনারই ইবাদাত করি এবং কেবল আপনার কাছেই সাহায্য চাই" এই অর্থের গূঢ়তত্ত্ব নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা এসেছে বইয়ে। এই আয়াতের মূল অর্থ জীবনে ধারণ করতে বা একজন সালিক এই মাকামে (স্তরে) পৌঁছানোর জন্য তাকে কোন কোন স্টেশন বা মানযিল পাড়ি দিতে হবে সেই ব্যপারে ইসলামি বিশ্বের প্রথম সারির একজন আলেম, ইমাম ইবনুল কায়্যিম রাহিমাহুল্লাহ খুঁটিনাটি সব দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তাঁর অতুলনীয় লেখনীর মাধ্যমে। তাই বইটা হয়ে উঠেছে একটা আদর্শ গাইডবুক একজন আল্লাহর পথের যাত্রীর জন্য, যে আল্লাহর নৈকট্য পেতে আসলেও আগ্রহী।

পাঠ্যানুভূতিঃ


আমার সবচেয়ে প্রিয় লেখকবৃন্দ হলেন ক্লাসিক্যাল ইসলামিক স্কলাররা। তাঁদের লেখনী সমৃদ্ধ করেছে ইসলামি জ্ঞানের পরিমণ্ডলকে। তাঁদের লেখায় যেন রত্ন ঝড়ে। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা এমনই বরকত দিয়েছিলেন তাঁদের কলমে,ইলমে,কাজে। সেই স্কলারদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন ইমাম ইবনুল কায়্যিম রাহিমাহুল্লাহ।

বইটা পড়ে যে পরিমাণ উপকৃত হয়েছি, সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। যে কেউ এই বই পড়লে নিজের ইলমে, আমলে পরিবর্তন স্বচক্ষে দেখতে পাবেন যদি আল্লাহ তায়ালা চান তো।

তাছাড়া বইটা পড়ে আমার প্রতিটা সময় আরো বেশি বেশি উপলব্ধি এসেছে যে কেন সুরা ফাতিহা দিয়ে কুর'আন শুরু হয়েছে। কেন এই সুরা এমন অমূল্য সম্পদ যা পুর্ববর্তী কোনো আসমানী কিতাবে ছিল না এমন দাবি করা হয়- সেটাও বুঝেছি। কারণ-

যে "ইয়্যাকা না'বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতা'য়িন" জীবনে পরিপূর্ণ মাত্রায় ধারণ করতে পারবে, সেই পারবে আল্লাহ তায়ালার পূর্ণ দাসত্বে নিজেকে বিলীন করে দিতে। সেটা কেবল দুজনই পেরেছিলেন। তারা হলেন, ইবরাহিম আলাইহিস সালাম ও হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তাই এই পথই সালিকের পথ। যার প্রতিটা মানযিল পেরোতে পেরোতে বান্দা হয়ে উঠবে আল্লাহর অতি নৈকট্যপ্রাপ্তদের একজন। যার ব্যাপারে সুরা ওয়াকিয়ায় এসেছে, "সাবিকুনাস সাবিকুন"।

 

Comments

Popular posts from this blog

বই রিভিউ #০১: সংশয়বাদী

  বই রিভিউ #০১ বই:সংশয়বাদী লেখক: ড্যানিয়েল হাকিকাতযু    বই: সংশয়বাদী লেখক: ড্যানিয়েল হাকিকাতযু অনুবাদ: আসিফ আদনান প্রকাশনী: ইলমহাউজ পাবলিকেশন পৃষ্ঠা: ২৬৫ আজকের দিনে আমাদের চারপাশে দেখলে দেখব বিভিন্ন মত, আদর্শের (ideology) র জগাখিচুড়ি। এতোশত "Ism" যে গুণে শেষ করা দায়। Ism এর লেজ লাগানো শব্দগুলো কিন্তু আবার খুব eye catching। যেমন Feminism, Liberism, Harm principle, Nihilism, Modernity ইত্যাদি ইত্যাদি। আমরা কেবল এইসব চটকদার শব্দের উপরের মোড়ক দেখে ভাসাভাসা বুঝে স্রোতের সাথে গা ভাসিয়ে হয়ে যায় এইসব মতাদর্শী। আর এই প্রত্যেকটা মতই একেকটা ideology নিয়ে ঘুরে। পুরো একটা দর্শন, একটা worldview দেয়। কিন্তু আমরা ভাবি এইগুলো কেবল কিছু "ভালো" আদর্শ। মামুলি ব্যাপার!   প্রতিটা "ism" যেহেতু একেকটা worldview দেয় আর ওদিকে ইসলাম একটা পরিপূর্ণ দ্বীন বা worldview, তাই ইসলামের সাথে এইসব "ism" এরই দ্বন্দ্ব বাঁধে। কারণ "ism" গুলোকে যতোই নিদেনপক্ষে নিরীহ লাগুক না কেন, আসলে সেগুলো পুরো দুনিয়ার প্রতিটা মানুষের মেনে নেওয়ার দাবি করে। এদিকে জীবনের প্রতিটা ছোট-বড় কাজ, রা...

বই রিভিউ #০৮: কষ্টিপাথর-২: মানসাঙ্ক

  বই রিভিউ #০৮ বই: কষ্টিপাথর-২: মানসাঙ্ক লেখক: ডা.শামসুল আরেফীন বই: কষ্টিপাথর-২: মানসাঙ্ক লেখক: ডা.শামসুল আরেফীন (ধর্ষণ প্রতিরোধে পরিবার ও সমাজ) প্রকাশক: সন্দীপন প্রকাশন পৃষ্ঠা:২২৪ ধর্ষণ সমাজের এক অন্যতম ব্যাধি। যার প্রতিকার হাতড়ে বেড়াচ্ছে প্রাচ্য থেকে প্রতিচ্য, প্রতিটা সমাজ। সেক্যুলার world দিচ্ছে একেকটা নতুন উপায় বাতলে ধর্মের দেখানো পথ থেকে বেরিয়ে। কিন্তু তাতেও তো কমছে না এই রোগ। প্রায় প্রতিদিন পত্রিকা খুললেই কমপক্ষে একটা ধর্ষণের খবর চোখে পড়বেই।  যেকোনো ধর্ষণের ঘটনার পরে দুইদলের আবির্ভাব হয়। একদল কেবল ভুক্তভোগীর পোশাকের দোষ দিয়ে নিস্তারের পথ খোঁজে। কেবল পোশাকই যদি সব গণ্ডগোলের মূল হয়, তবে কয়েকদিন আগের সেই তৃতীয় শ্রেণীর ফুটফুটে বাচ্চার কোন উত্তেজক পোশাকে পিশাচগুলোর পাশবিকতার শিকার হতে হয়েছিল তাকে? এখন তো কুকুর-বিড়াল-গুইসাপও এই ধর্ষণের তালিকা থেকে বাদ যায় না। তাদেরও কি তাহলে পোশাকের দোষ? আরেকদল কেবল ধর্ষককে, ছেলেদের মেন্টাল সেটআপকে পরিবর্তনের কথা গলা ফাটিয়ে বলে। কিন্তু তথ্য, উপাত্ত ও experiment থেকে উঠে এসেছে যে কেবল ৮% ধর্ষক বাদে বাকি ৯২% হলো মামুলি মানুষ। মামুলি বলতে বোঝাতে ...

সাজিয়ে ফেলুন জিলহজ্জের প্রথম দশদিন

  সাজিয়ে ফেলুন  জিলহজ্জের প্রথম দশদিন Plan your first decade of Dhul Hijjah #Spiritual  দেখতে দেখতে চলে আসছে জিলহজ্জ্ব মাস। চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে এই মাস জুনের ৭ নাকি ৮ তারিখে শুরু হতে যাচ্ছে। জিলহজ্জ্ব বা যুল হিজ্জার প্রথম দশদিনের তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য নিয়ে কুর'আন ও হাদিসের বহু জায়গায় বলা হয়েছে। এই দশ দিনের মর্যাদা খুব ছোট করে উল্লেখ করছি। জিলহজ্জ্ব মাসের প্রথম দশ দিনের মর্যাদা: সুরা আল-ফাজরের শুরুতেই আল্লাহ তা'য়ালা দশ রাতের কসম খেয়ে বলেছেন, কসম ভোরবেলার, কসম দশ রাতের। (সুরা ফাজর, আয়াত ১,২) ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু, কাতাদা ও মুজাহিদ প্রমুখ তাফসিরবিদদের মতে, এই দশ রাত বলতে জিলহজ্জ্ব মাসের প্রথম দশদিন বোঝানো হয়েছে।  হাদিসের ভাষায় এই দশ দিন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম দিন। হাদিসে এসেছে, এদিনগুলোতে নেক আমল করার চেয়ে অন্য কোন দিন নেক আমল করা আল্লাহর নিকট এত উত্তম নয়, অর্থাৎ জিলহজের দশ দিন। সাহাবায়ে কিরাম বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর পথে জিহাদও নয়? রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদও নয় তবে সে ব্যক্তির কথা ভিন্ন যে নিজের জান ও ...