Skip to main content

বই রিভিউ #০১: সংশয়বাদী

 

বই রিভিউ #০১

বই:সংশয়বাদী

লেখক: ড্যানিয়েল হাকিকাতযু 

 
বই: সংশয়বাদী
লেখক: ড্যানিয়েল হাকিকাতযু
অনুবাদ: আসিফ আদনান
প্রকাশনী: ইলমহাউজ পাবলিকেশন
পৃষ্ঠা: ২৬৫

আজকের দিনে আমাদের চারপাশে দেখলে দেখব বিভিন্ন মত, আদর্শের (ideology) র জগাখিচুড়ি। এতোশত "Ism" যে গুণে শেষ করা দায়। Ism এর লেজ লাগানো শব্দগুলো কিন্তু আবার খুব eye catching। যেমন Feminism, Liberism, Harm principle, Nihilism, Modernity ইত্যাদি ইত্যাদি। আমরা কেবল এইসব চটকদার শব্দের উপরের মোড়ক দেখে ভাসাভাসা বুঝে স্রোতের সাথে গা ভাসিয়ে হয়ে যায় এইসব মতাদর্শী। আর এই প্রত্যেকটা মতই একেকটা ideology নিয়ে ঘুরে। পুরো একটা দর্শন, একটা worldview দেয়। কিন্তু আমরা ভাবি এইগুলো কেবল কিছু "ভালো" আদর্শ। মামুলি ব্যাপার!  

প্রতিটা "ism" যেহেতু একেকটা worldview দেয় আর ওদিকে ইসলাম একটা পরিপূর্ণ দ্বীন বা worldview, তাই ইসলামের সাথে এইসব "ism" এরই দ্বন্দ্ব বাঁধে। কারণ "ism" গুলোকে যতোই নিদেনপক্ষে নিরীহ লাগুক না কেন, আসলে সেগুলো পুরো দুনিয়ার প্রতিটা মানুষের মেনে নেওয়ার দাবি করে। এদিকে জীবনের প্রতিটা ছোট-বড় কাজ, রাষ্ট্র কাঠামো, অর্থনীতি ইত্যাদি কোনটা কেমন হবে, সব ইসলামে সুগঠিতভাবে ও পরিপূর্ণতার সাথে বলে দেওয়া।

তবে এইসব "মতাদর্শ" এসে ইসলামকে আক্রমণ করে এই বলে যে "ইসলামের সংস্কার দরকার", "ইসলামে কি বাক-স্বাধীনতা আছে?" "এটা আছে?" "ওটা আছে?" ইত্যাদি। এইসব প্রশ্নের সামনে একজন মুসলিম তরুণ বিপাকে পড়ে যায়। হয়ে ওঠে সংশয়বাদী। কিন্তু সে যদি এইসব "ism" গুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখে, তবে এই প্রশ্নগুলোকেই উল্টো প্রশ্ন করে "ism" গুলোর অকেজো দিক, অন্তঃসারশূন্যতা সামনে এনে প্রশ্নগুলোর ভিত নাড়িয়ে দিতে পারে। সেই লক্ষ্যেই প্রতিটা মতাদর্শ ধরে ধরে ব্যবচ্ছেদ করা হয়েছে এই বইয়ে। প্রতিটা মতের-আর্দশের গভীরে জানা,  সেক্ষেত্রে ইসলামের অবস্থান এবং কোথায় এই মতাদর্শের দ্বন্দ্ব লাগছে ইসলামের সাথে -এই বিষয়গুলোই উঠে এসেছে প্রতিটা articles এ। তাই এই বইটা আসলে একটা gems বর্তমানের বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনকে রুখে দেওয়ার জন্য।

পাঠ্যানুভূতি:


ইসলাম আর এই মতাদর্শগুলো নিয়ে আস্তে আস্তে যখন জানতে শুরু করি, তখন থেকেই এই "ism" গুলো নিয়ে একটু হলেও গভীরে গিয়ে জানার প্রচণ্ড আগ্রহ কাজ করতো আমার। নেশা বললে বেশি appropriate লাগে। সেই নেশা থেকেই এই বইয়ে যখন রকমারির "একটু পড়ে দেখুন" থেকে দেখি প্রায় সব major "ism" নিয়ে বইটা লেখা, তখনই কিনে ফেলি লোভে পড়ে।

লোভে পড়ে তড়িঘড়ি কিনলেও, পড়তে অনেকদিন লেগে গিয়েছে। Reader's block চলায় কতবার যে পড়েছি আর কতবার ছেড়েছি, তার ঠিক নেই। যাই হোক। তাও কাল রাতে marathon দিয়ে বইটা শেষ করলাম আলহামদুলিল্লাহ।

বইটা পড়ে অনেক "ism" সম্পর্কে খুঁটিনাটি বিষয় জানতে পেরেছি। ইসলামের দ্বন্দ্বে পড়ার কারণ, কিভাবে এইসব মতাদর্শী লোক ইসলামের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় আর কিভাবে সেগুলো tackle করতে হয়, সেগুলোও চমৎকারভাবে বইয়ে লেখা হয়েছে। 

আসিফ আদনান ভাইয়ের অনুবাদ পড়ে মনেই হচ্ছিল না যে এই বই আসলে লেখা English এ। আমি অনুবাদ পড়ছি। উলটো মনে হচ্ছিল যেনো বইটা আসলে বাংলায় লেখা। 

যাক, শেষমেশ বর্তমান জামানার বুদ্ধিবৃত্তিক এই নিরব যুদ্ধে কে কোন দলে আর কে কিভাবে পৃথিবীর দখল নিতে চাচ্ছে, সেগুলো নিয়ে আরেকটু গভীর ধারণা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। আর এইসব বইয়ে আমি rating দেই না। এই বইয়ে দিতেও পারছি না কারণ 10/10 দিলেও কম বলা হবে। একটা masterpiece বই আমার reading list এ done section এ গেলো। আলহামদুলিল্লাহ।



Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

বই রিভিউ #০৮: কষ্টিপাথর-২: মানসাঙ্ক

  বই রিভিউ #০৮ বই: কষ্টিপাথর-২: মানসাঙ্ক লেখক: ডা.শামসুল আরেফীন বই: কষ্টিপাথর-২: মানসাঙ্ক লেখক: ডা.শামসুল আরেফীন (ধর্ষণ প্রতিরোধে পরিবার ও সমাজ) প্রকাশক: সন্দীপন প্রকাশন পৃষ্ঠা:২২৪ ধর্ষণ সমাজের এক অন্যতম ব্যাধি। যার প্রতিকার হাতড়ে বেড়াচ্ছে প্রাচ্য থেকে প্রতিচ্য, প্রতিটা সমাজ। সেক্যুলার world দিচ্ছে একেকটা নতুন উপায় বাতলে ধর্মের দেখানো পথ থেকে বেরিয়ে। কিন্তু তাতেও তো কমছে না এই রোগ। প্রায় প্রতিদিন পত্রিকা খুললেই কমপক্ষে একটা ধর্ষণের খবর চোখে পড়বেই।  যেকোনো ধর্ষণের ঘটনার পরে দুইদলের আবির্ভাব হয়। একদল কেবল ভুক্তভোগীর পোশাকের দোষ দিয়ে নিস্তারের পথ খোঁজে। কেবল পোশাকই যদি সব গণ্ডগোলের মূল হয়, তবে কয়েকদিন আগের সেই তৃতীয় শ্রেণীর ফুটফুটে বাচ্চার কোন উত্তেজক পোশাকে পিশাচগুলোর পাশবিকতার শিকার হতে হয়েছিল তাকে? এখন তো কুকুর-বিড়াল-গুইসাপও এই ধর্ষণের তালিকা থেকে বাদ যায় না। তাদেরও কি তাহলে পোশাকের দোষ? আরেকদল কেবল ধর্ষককে, ছেলেদের মেন্টাল সেটআপকে পরিবর্তনের কথা গলা ফাটিয়ে বলে। কিন্তু তথ্য, উপাত্ত ও experiment থেকে উঠে এসেছে যে কেবল ৮% ধর্ষক বাদে বাকি ৯২% হলো মামুলি মানুষ। মামুলি বলতে বোঝাতে ...

সাজিয়ে ফেলুন জিলহজ্জের প্রথম দশদিন

  সাজিয়ে ফেলুন  জিলহজ্জের প্রথম দশদিন Plan your first decade of Dhul Hijjah #Spiritual  দেখতে দেখতে চলে আসছে জিলহজ্জ্ব মাস। চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে এই মাস জুনের ৭ নাকি ৮ তারিখে শুরু হতে যাচ্ছে। জিলহজ্জ্ব বা যুল হিজ্জার প্রথম দশদিনের তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য নিয়ে কুর'আন ও হাদিসের বহু জায়গায় বলা হয়েছে। এই দশ দিনের মর্যাদা খুব ছোট করে উল্লেখ করছি। জিলহজ্জ্ব মাসের প্রথম দশ দিনের মর্যাদা: সুরা আল-ফাজরের শুরুতেই আল্লাহ তা'য়ালা দশ রাতের কসম খেয়ে বলেছেন, কসম ভোরবেলার, কসম দশ রাতের। (সুরা ফাজর, আয়াত ১,২) ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু, কাতাদা ও মুজাহিদ প্রমুখ তাফসিরবিদদের মতে, এই দশ রাত বলতে জিলহজ্জ্ব মাসের প্রথম দশদিন বোঝানো হয়েছে।  হাদিসের ভাষায় এই দশ দিন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম দিন। হাদিসে এসেছে, এদিনগুলোতে নেক আমল করার চেয়ে অন্য কোন দিন নেক আমল করা আল্লাহর নিকট এত উত্তম নয়, অর্থাৎ জিলহজের দশ দিন। সাহাবায়ে কিরাম বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর পথে জিহাদও নয়? রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদও নয় তবে সে ব্যক্তির কথা ভিন্ন যে নিজের জান ও ...